সুদীর্ঘকাল থেকে পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলা শিক্ষার দিক থেকে অগ্রসর । এই এলাকার অভিভাবকেরা গতানুগতিক প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলছিল।ফলে দেখা যেত বোদা উপজেলার দূর-দুরান্ত হতে অভিভাবকেরা তাদের সন্তানদের উপজেলা সদরে প্রতিষ্ঠিত কিন্ডার গার্টেন টাইপের প্রাইভেট স্কুলের দিকে ঝুকে পড়ছিলো। এই কিন্ডার গার্টেন টাইপের স্কুলগুলো ব্যক্তি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত বলে এসব স্কুলে শিক্ষার্থীদের বেতন দিয়ে পড়াতো হতো। সরকার প্রতিষ্ঠিত প্রাইমারী স্কুলগুলো সম্পূর্ণ অবৈতনিক হলেও অভিভাবকদের প্রাইভেট স্কুলগুলোর প্রতি আগ্রহের চিন্তা মাথায় নিয়ে বোদা উপজেলা সদরে একটি কিন্ডারগার্টেন প্রতিষ্ঠার কথা চিন্তা করেন বোদা উপজেলার সদরে অব¯ি’ত বোদা মহিলা মহাবিদ্যালয়ের প্রভাষক আবু হেনা মো: মোবিনুল ইসলাম কাজল। এ উপলক্ষে তিনি একটি সভা আহবান করেন ২০০৬ সালের জুন মাসে এবং উক্ত সভায় ০৯ সদস্য বিশিষ্ট “কিন্ডার গার্টেন” প্রতিষ্ঠা কমিটি গঠন করা হয়।
শুরু হয় কিন্ডার গার্টেন প্রতিষ্ঠার কাজ। এর জন্য প্রয়োজন একটি জায়গা। সেক্ষেত্রে সর্বপ্রথমে বোদা মহিলা মহাবিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে প্রতিষ্ঠানটি অ¯’ায়ীভাবে সকাল ৭.৩০ টা হতে ৯.৩০ টা পর্যন্ত মহাবিদ্যালয়ের ক্লাশ চালুর পুর্ব সময়ে করার প্রস্তাব করা হলে বোদা মহিলা মহাবিদ্যালয়ের তৎকালীন অধ্যক্ষ ও গর্ভনিং বডির সভায় অনুমতি মেলে। সে বছরই কিন্ডার গার্টেন প্রতিষ্ঠা কমিটির সভায় প্রতিষ্ঠানটির নাম “বর্ণমালা কিন্ডার গার্টেন” এবং প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বা অধ্যক্ষ হিসেবে আবু হেনা মোঃ মোবিনুল ইসলামকে করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সে মোতাবেক ২০০৬ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রতিষ্ঠানটির সাইনবোর্ড লাগিয়ে ২০০৭ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সে বছর এলাকার ৯৭ জন শিক্ষার্থীকে দিয়ে মোট ০৬ জন শিক্ষক নিয়ে বর্ণমালা কিন্ডার গার্টেন আত্মপ্রকাশ করে। সে হতে পথ চলা, এগিয়ে চলা। দীর্ঘ ১৩ বছর হতে প্রতিষ্ঠানটি বোদা মহিলা মহাবিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে পরিচালিত হয়ে আসছিলো। কিš‘ একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আরেকটি প্রতিষ্ঠানের পূর্ণ বিকাশ সম্ভব নয় মর্মে প্রতিষ্ঠানটিকে ¯’ানান্তরের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়। সে মোতাবেক শুরু হয় জায়গা খোঁজা। প্রাথমিকভাবে বোদা বাজার সংলগ্ন রাজার দিঘীর পাশে একটি জায়গা ব্যবহারের অনুমতি পাওয়া গেলেও সেটা নিশ্চিত না হওয়ায় বোদার ঝিনাইকুড়ি নদীর পার্শ্বে আরেকটি জায়গা নির্ধারিত হয়। সে অনুযায়ী কাজ শুরু হলেও সেটিও ভেস্তে যায়। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানটি ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হলে বোদার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আশা এন্টার প্রাইজের স্বত্তাধিকারী মো: আরিফ হোসেন আপেল এগিয়ে আসে।
বর্ণমালা কিন্ডার গার্টেনের অভিভাবক মো: জাভেদ মজুমদারের প্রস্তাবে এবং তার মধ্য¯’তায় প্রতিষ্ঠানটিকে আরও আধুনিক এবং মানসম্মত একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মানসে মো: আরিফ হোসেন আপেল তার পিতা বোদার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এবং বোদা বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মো: আজাহার আলীর সাথে এ বিষয়ে আগ্রহের কথা জানালে তিনি নিজেও প্রতিষ্ঠানটির সাথে যুক্ত হতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। শুরু হয় বর্ণমালা কিন্ডারগার্টেনকে আধুনিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার কাজ। মো: জাভেদ মজুমদার খসরুর মধ্য¯’তায় মো: আরিফ হোসেন আপেল এবং মো: আজাহার আলী, মো: মোবিনুল ইসলাম কাজল একত্রে বসে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রতিষ্ঠানটি আরও আধুনিক এবং সমৃদ্ধ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত হয় এবং ক্যাম্পাস হিসেবে নির্ধারিত হয় নির্মানাধীন বোদা থানা পাড়ার আশা টাওয়ার। সে মোতাবেক একটি ১০ সদস্য বিশিষ্ট বাস্তবায়ন কমিটি গঠন হয়।
বাস্তবায়ন কমিটি:
১। মো: আজাহার আলী – সভাপতি
২। মো: আশরাফুল আলম – সদস্য
৩।মো: আব্দুর রশিদ- সদস্য
৪। প্রবীর কুমার চন্দ- সদস্য
৫। মো: ইব্রাহীম খলিল- সদস্য
৬। মো: আরিফ হোসেন আপেল- সদস্য
৭। মো: জাভেদ মজুমদার খসরু- সদস্য
৮। মুনমুন সেন রায় – সদস্য
৯। তাজমিরা তানজিন- সদস্য
১০। আবু হেনা মো: মোবিনুল ইসলাম- সম্পাদক
বাস্তবায়ন কমিটির প্রথম সভায় প্রতিষ্ঠানটির আরও শিক্ষাক্রম বৃদ্ধিকল্পে বর্ণমালা কিন্ডার গার্টেন হতে বর্ণমালা বিদ্যাপীঠ নাম করণের প্রস্তাব গৃহীত হয়। সভায় প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান মো: আজাহার আলী, ব্যব¯’াপনা পরিচালক মো: আরিফ হোসেন আপেল, অধ্যক্ষ হিসেবে আবু হেনা মো: মোবিনুল ইসলাম এর নাম চুড়ান্ত হয়। সে মোতাবেক শুরু হয় বোদা থানাপাড়া¯’
আশা টাওয়ারের তৃতীয় তলায় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকরণের কাজ। সবশেষে গত ডিসেম্বর ২০১৯ সালের ০৩ তারিখ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের রেলপথ মন্ত্রনালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব নূরুল ইসলাম সুজন বর্ণমালা বিদ্যাপীঠ এর নবনির্মিত ক্যাম্পাসের শুভ উদ্ভোধন করেন। আমাদের আগামী পথ চলার ভাবনা- প্রতিষ্ঠানটিকে পর্যায়ক্রমে উ”চ মাধ্যমিকে উন্নীত করা এবং সম্পুর্ণ আবাসিক ব্যব¯’া চালু করা। আগামী দিনের স্বপ্ন পুরণে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ।